মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার
নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানায় অনুষ্ঠিত হলো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সভা, যেখানে জুলাই মাসের গণআন্দোলন, রাষ্ট্রীয় অবক্ষয় ও স্বৈরাচারবিরোধী কর্মসূচি নিয়ে উঠে আসে দৃঢ় বক্তব্য ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা।
সোমবার (৮ জুলাই) সকাল ১০টায় ফতুল্লা থানা কার্যালয়ে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফতুল্লা থানা শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের তরুণ সমাজ এখন জাতির আশার প্রতীক। ২৪ জুলাইয়ের গণআন্দোলন ছিল দুঃশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদী অবস্থান। এটি ছিল আমাদের ছাত্র ও যুবসমাজের একটি ঐতিহাসিক জাগরণ।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই কেবল আবেগ নয়; এটি রাষ্ট্র সংস্কার ও জনগণের মুক্তির জন্য দেওয়া রক্তের প্রতীক। যারা এই দিনের গুরুত্বকে অস্বীকার করে, তারা জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে—অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন, অনেকে রক্ত দিয়েছেন, এমনকি প্রাণও দিয়েছেন।”
সভায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কাঠামোতে মৌলিক সংস্কার এবং পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে নির্বাচন নিশ্চিত করার দাবিতে চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করার ঘোষণা দেন তিনি। শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা শপথ করছি—এই দেশে যেন আর কোনো স্বৈরাচার জন্ম না নেয়, যেন জনগণের অধিকার বারবার দলিত না হয়। জনগণের ভোট ও প্রতিনিধিত্ব যেন প্রকৃত অর্থে প্রতিষ্ঠা পায়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাব।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা ইসলামী আন্দোলনের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আমান উল্লাহ, আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, আলহাজ্ব শাহ জাহান বেপারী, সেক্রেটারি মুহাম্মাদ যোবায়ের হুসাইন, জয়েন্ট সেক্রেটারি মুহা. মাসুদুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুহা. মাসুদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব রুবেল হুসাইন, প্রচার ও
দাওয়াহ সম্পাদক এম. শফিকুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক মুহা. মুক্তার হুসাইন, অর্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ্ব সাইদুল ইসলাম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক শেখ মুহা. আতিকুর রহমান, ছাত্র ও যুব সম্পাদক আলহাজ্ব শাহাদাত হোসেন রানা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুফতি ইমরান হুসাইন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক মুহা. বেলাল হুসাইন,
কৃষি ও শ্রম সম্পাদক আলহাজ্ব মুহা. ওয়াসিম উদ্দিন, মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক মুহা. আবুল বাশার, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মুহা. আব্দুল জলিল, সংখ্যালঘু সম্পাদক মুহা. জহিরুল ইসলাম, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মুহা. শরিফুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক মুহা. মাহফুজ উদ্দিন ইসলাম।
এছাড়াও, সহকারী পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ মুহা. মিজানুর রহমান, মুহা. শহিদুল ইসলাম, মুহা. মোশারফ হুসাইন, মুহা. আক্তার হোসেন, মামুন ফিরোজ এবং সাধারণ সদস্যদের মধ্যে মুহা. দেলওয়ার, মুহা. আজিম উদ্দিন, ইউনুস গাজী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একটি আদর্শিক ভিত্তিতে পরিচালিত রাজনৈতিক দল, যারা ক্ষমতার মোহে নয় বরং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত। তারা বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে একটি “বিকল রাষ্ট্র কাঠামো” হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে নির্বাচন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে হবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “স্বৈরাচার আর দুর্নীতির জঞ্জালে নিমজ্জিত রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে হলে, তরুণ প্রজন্মকে জাগ্রত করতে হবে। রাজনীতি করতে হবে নীতি-আদর্শে, ক্ষমতার লোভে নয়। ইসলামী আন্দোলন এ আদর্শেই অটল থাকবে ইনশাআল্লাহ।”