রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ০১:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থান, বর্ণাঢ্য বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিজয় মিছিল অনুষ্ঠিত ভুয়া ফেসবুক আইডিতে প্রেমের জাল: কুষ্টিয়ায় নারীর বিরুদ্ধে ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ‎দুমকীতে মাদক বিরোধীতা করায়, যুবককে ছুরিকাহত ও প্রাননাশের হুমকির অভিযোগ দক্ষিণ বঙ্গ আন্তর্জাতিক সাহিত্য পরিষদ- এর নতুন  কমিটি গঠন: সভাপতি বাবুল আকতার, সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন উপলক্ষে দুমকিতে বিএনপি’র হাজারো নেতাকর্মীর ঢল সোনারগাঁয়ে আজহারুল ইসলাম মান্নানের নেতৃত্বে বিএনপির বিজয় র‍্যালি কলমাকান্দা বিএনপি’র উদ্যোগে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ পালিত মরিওম হত্যা মামলার ১০ দিন অতিবাহীত পুলিশ বলছে রহস্যজনক  বরিশাল বিভাগের গর্ব — নিবন্ধিত কমিউনিটি প্যারামেডিক শামিনুল ইসলাম (শাওন) সাফল্যের গল্প কমিউনিটি প্যারামেডিক দিপু রানী

সুন্দরগঞ্জে ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে প্রতারণা, ভুয়া কাজীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, / ৫৪ Time View
শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫, ৭:৩৫ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক,

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ধর্মীয় আচার-বিচারের মতো গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিষয়ে প্রতারণার একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সম্প্রতি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এলাকাবাসীর তৎপরতায় গত ২৮ জুন (শুক্রবার) বাহিরগোলা জামে মসজিদসংলগ্ন সুনামী মার্কেট এলাকা থেকে মোঃ হাফিজুর রহমান (৭০) নামের এক ভুয়া কাজীকে আটক করা হয়েছে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বিয়ে ও তালাক সম্পাদনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, হাফিজুর রহমান নিজেকে ‘সাব-কাজী’ পরিচয়ে পরিচিত করে সাধারণ মানুষের বিয়ে ও তালাকের কাবিননামা সম্পাদন করে আসছিলেন। অথচ তার কোনো বৈধ নিয়োগপত্র কিংবা সরকারি অনুমোদন ছিল না। কাবিন সম্পাদনের নামে তিনি অর্থ আদায় করতেন এবং তার দ্বারা সম্পাদিত কাবিননামাগুলো পরবর্তীতে ভুয়া প্রমাণিত হতো।

এই ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন দহবন্দ ইউনিয়নের উত্তর বামনজল গ্রামের কাজী মোঃ সোলাইমান মিঞা। অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজের গ্রামের পরিচয় গোপন রেখে গাইবান্ধা সদর উপজেলার ১নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের রেজিস্ট্রার কাজী মোখলেছুর রহমানের তালাকনামার রেজিস্ট্রার বই (ক্যাটালগ নং-৬) ব্যবহার করে ভুয়া সাব-কাজী হিসেবে পরিচয় দিতেন। এ বই ব্যবহার করে তিনি একাধিক বাল্যবিবাহ ও ভুয়া তালাকনামাও তৈরি করেছেন।

প্রতারণার প্রমাণ বেরিয়ে আসে আরও স্পষ্টভাবে যখন কাজী মোখলেছুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি কাউকে সাব-কাজী নিযুক্ত করিনি। বইটি ব্যবহারের অনুমতিও দেইনি।” তবে পরে জানা যায়, হাফিজুর রহমানের ভাই মোঃ গোলাম মোস্তফা স্বীকার করেন যে তিনিই বইটি দিয়েছেন।

ঘটনার দিন স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা হাফিজুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং তার পরিচয় ও কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একপর্যায়ে প্রতারণার প্রমাণ পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে আটক করে তাকে জিজ্ঞেসাবাদ করা হয়।

সুন্দরগঞ্জ থানার ডিএসবি (গোয়েন্দা শাখা) খায়রুল জামান বলেন,
“পুরো বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। যে বইটি ব্যবহার করা হয়েছে, তার উৎস ও ব্যবহারের বৈধতা যাচাই করা হচ্ছে। যথাযথ প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, “বিয়ের মতো পবিত্র ধর্মীয় ও সামাজিক বিধানকে ঘিরে কেউ প্রতারণা করলে তা শুধু আইন নয়, মানবাধিকার ও নৈতিকতারও চরম লঙ্ঘন। সমাজের প্রতিটি মানুষকে সচেতন হতে হবে যাতে এমন প্রতারণা আর কেউ না করতে পারে।”

তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, প্রতিটি ইউনিয়নে বৈধ কাজী ও সাব-কাজীদের তালিকা প্রকাশ, তাদের কার্যক্রমের নিয়মিত তদারকি এবং বই ব্যবহারে ডিজিটাল রেকর্ড নিশ্চিত করতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By BDiT